নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশন থেকে ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন ডিপোর টুল ভ্যানের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল চুরির ঘটনা ঘটেছে ।
এ ঘটনায় রোববার সকালে চট্টগ্রাম রেল কর্তৃপক্ষ সহকারী পরিবহন কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। গত শুক্রবার এ চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী করে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় রেল সূত্র জানায়, রেলওয়ে দূঘর্টনা কবলিত বগি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বহন ও সংরক্ষণে এ বিশেষ বগিটি ব্যবহার করা হয়। এ রেল বগিটি রেলওয়ে ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন ডিপোর ইনচার্জ ট্রেন এক্সজামিনার (হেড টিএক্সআর) এবং ওই বিভাগের স্টোর মুনসি দায়িত্বে থাকে।
এটি প্রতিদিন সকাল ৯ টায় ও বিকেল ৫ টায় দু বেলা চ্যাকিং করার নিয়ম রয়েছে হেড টিএক্সআর ও স্টোর মুনসির। এ বগিটি দীর্ঘ দিন ধরে রেলওয়ে জংশনের উত্তর পাশে সংরক্ষিত একটি পকেট লাইনে রাখা হয়।
মামলাও স্থানীয় সুত্র জানায়, গত শনিবার ৪ নং আপ সমতট এক্সপ্রেস ট্রেনের ৪০১ নং কোচ এস এর সেলভেজ করার জন্য দুপুর ১২ টায় জ্যাক স্ক্রু সহ মালামাল আনতে এটিক্সআর কফিল উদ্দিন ও ফিডার স্টাফ হরে কৃষ্ণ গিয়ে দেখেন এর তালাটি ভাঙ্গা। পরে তারা খুলে দেখেন টুল ভ্যানে জেনারেটর ও কাঠের কয়েকটি স্লিপার ছাড়া কিছুই নেই।
সূত্র আরও জানায়, এ ঘটনার সময় হেড টিএক্সআর জাকির হোসেন ওমরাহ হজ্বের ছুটিতে থাকায় দায়িত্বে ছিলেন সদ্য বিদায়ী লোকো ইনচার্জ ফোরম্যান মো. সোলেমান ও স্টোর মুনসি হাসান আহমেদ পলাশ।
এদিকে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমান জানান, এ ঘটনা তদন্তে সহকারী পরিবহন কর্ম কর্তাকে প্রধান করে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারী পরিদর্শক ও যান্ত্রিক বিভাগের সহকারী কর্মকর্তাকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মাসুদ আলম জানান, শনিবার রাতে ওই টুল ভ্যানের ৫৬ টি বিভিন্ন মালামাল চুরির একটি অভিযোগ দায়ের করেন হেড টিএক্সআর জাকির হোসেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ২৫ আগস্ট শুক্রবার রাত ৭ টা থেকে ২৬ আগস্ট শনিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে এ চুরি ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত শেষ না করে এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রেলওয়ে কর্মকর্তা দাবি করেন, এ চুরির অভিযোগ রহস্যজনক ও সাজানো। তাদের দাবি, এ বগিটি রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী অফিসের পাশে ছিল। পাশাপাশি সেখানে রেলওয়ের বাউন্ডারি রয়েছে। মালামাল কখন চুরি হলো এ বিষয়ে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। কেবল ধারণা করছেন। তারা আশা করেন, পুলিশ প্রশাসন ভালোভাবে তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনাটি বেরিয়ে আসবে। এই টুল ভ্যান থেকে অন্তত ৫০টির অধিক মালামাল চুরি হয়েছে।
রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. আবিদুর রহমান বলেন, কত টাকার মালামাল চুরি হয়ে তদন্ত ছাড়া এখনই বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. রাজিব ফেরদৌসকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনায় চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page